মোল্লা সোহেল-
ঢাকা ক্রাইম নিউজ: এলিট ফোর্স র্যাব সর্বদা আইন শৃংখলা রক্ষা, আইন লংঘনকারীকে বিচারের আওতায় আনা, জনগনের জানমালের সুরক্ষা, সন্ত্রাসী,
ছিনতাইকারী , চাঁদাবাজ ও প্রতারক গ্রেফতার এবং অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে আসছে।
এ প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী সাধারণ
মানুষজন প্রায়শই বিভিন্ন প্রতারক চক্রের নিকট সর্বস্ব হারিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিযোগ করে আসছে।
অদ্য ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, আনুমানিক ১৫০০ ঘটিকায় একটি বিশেষ অভিযানে র্যাব-১০, সিপিসি-১, ধলপুর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল মেজর আশারাফুল হক পিএসসি, জি এর নেতৃত্বে রাজধানী ঢাকার হাজারীবাগ থানাধীন শেরে বাংলা রোডস্থ রায়ের বাজার
এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে
মোঃ আলামিন ফাহিম, পিতা- গিয়াস উদ্দিন, বর্তমান ঠিকানা ২৭৪/১, ফ্লাট- ডি/২, রায়ের বাজার,হাজারী বাগ, ঢাকা,
স্থায়ী ঠিকানা- রাজাপুর, নান্দাইল, জেলা- ময়মনসিংহ নামের একজন প্রতারককে গ্রেফতার করে।
জনৈক মাহবুব সালাম ফাহিম নামক এক যুবক দীর্ঘদিন যাবৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়ে প্রথমত প্রেম ও পরে বিয়ের প্রলোভন ও ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন তরুণীদের কাছ থেকে ধারাবাহিকভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
তার এরূপ অপকর্মের শিকার ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত জনৈক তরুণীর লিখিত অভিযোগের উপর দীর্ঘ এক মাসের অধিক তদন্ত ও তথ্য সংগ্রহ করে আজ বিশেষ অভিযানটি পরিচালনা করা হয়।
উক্ত তরুণীর বরাতে জানা যায় যে, চার মাস আগে ফেসবুকে ফাহিমের সাথে তার পরিচয় হয়।
পরিচয়ের সুবাদে প্রথমে তাদের মাঝে প্রেম ও পরে ফাহিম তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়।
সম্পর্কের এ পর্যায়ে ফাহিম মেয়েটিকে জানায় যে, দীর্ঘদিন সুইজারল্যান্ডে প্রবাসে থাকায় বাংলাদেশে তার ০৬ টি ব্যাংক এ্যাকাঊন্ট বন্ধ হয়ে আছে যে কারনে তার কাছে কোন নগদ টাকা নেই,এমনকি সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত ও চোখে প্রাপ্ত জখমের উন্নত চিকিৎসার জন্য তার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ নেই।
এরূপ প্রতারণামূলক ছলচাতুরির মাধ্যমে প্রতারক ফাহিম উক্ত তরুণীর কাছ থেকে তিন ধাপে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের একটি এ্যাকাঊন্টের (আল আমিন) মাধ্যমে প্রায় আট লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিয়ে না করা ও কথিত প্রেমিক ফাহিম তার কাছ থেকে নেয়া অর্থ ফেরৎ দিতে অস্বীকার ও টালবাহানার এক পর্যায়ে প্রতারিত ছাত্রী রাজধানীর সুত্রাপুর থানায় একটি জিডি, নং-৯৪২ তংা-২৪/১২/১৮ করেন এবং র্যাব-১০ এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
র্যাব-১০ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও সরজমিনে তদন্ত করে অভিযোগকারীনি প্রতারিত ছাত্রীর অভিযোগের সত্যতা পায়।
র্যাব-১০ আরো জানতে পারে প্রতারক ফাহিম আলআমিন নামে বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্ট খুলে তার প্রতারণার শিকার তরুণীদের কাছ থেকে অর্থ
সংগ্রহ করত।
ফেসবুকে গধযধনঁন ঝধষধস ঋধযরস নামে একটি ফেইসবুক আইডি হতে বিভিন্ন সময় মেয়েদের প্রতারিত করে এবং
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে আসছে।
সে নিজেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জনৈক একজন মেজর জেনারেল এর ছেলে হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকে।
এই পরিচয়ে সে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও তৈরী করে। ফাহিম নিজেকে একজন প্রাক্তন বুয়েটিয়ান,
এ্যাপল কোম্পানীর নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার, সুইজারল্যান্ডের জুরিখ হতে পিএইচডি কৃত এবং কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের সাবেক ছাত্র হিসেবে
পরিচয় দিয়ে আসছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনুসন্ধানে জানা যায় কথিত ফাহিম (আলআমিন) বিগত কয়েক বছর যাবৎ
ফেইসবুকের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় প্রায় ৫০(পঞ্চাশ) জন তরুণীর সাথে তার ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে তোলে।
প্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, কথিত প্রতারক ফাহিম এস এস সি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।
তার পিতা এক সময় কৃষি কাজ করতেন, বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন।
তার অন্য দুই ভাইয়ের একজন কৃষক ও অপরজন স্থানীয়ভাবে গঞ্জের হাটে ঔষধের দোকান করেন।
প্রতারক ফাহিম (আলআমিন) ২০১৫ হতে ২০১৭ পর্যন্ত ০৩ বছর সৌদি প্রবাস জীবনে গাড়ি চালকের কাজ
করতেন।
ব্যাক্তি জীবনে ফাহিম দুই বার বিয়ে করেছেন এবং বর্তমানে স্ত্রী ও সন্তানসহ রাজধানীর রায়েরবাগ এলাকায় বসবাস করেন।
গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক ফাহিম (আলআমিন) এর বিরুদ্ধে ডিএমপি ঢাকার হাজারীবাগ থানায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।